মানুষের অন্তরে কি গ্রথিত আছে তা অপরের জানা সম্ভব নয়। সুতরাং অন্তঃকরণের বিষের হলাহলের আঁচ পাওয়া কখনোই সহজসাধ্য নয়, তদুপরি যদি মুখে অমৃতেরবাণী থাকে। এক্ষেত্রে শত্রু কখন শিয়রে এসে দাঁড়ায় তার খবর পাওয়া যায় না । কিন্তু যদি শত্রু মুখোমুখি হয় তবে সম্মুখ সমরে লড়া যায়।
সমাজে তাই আজ মানুষ চেনা খুবই কঠিন ।কারণ এরা সমক্ষে মধুর আলাপ করে কিন্তু পশ্চাতে ক্ষতির চেষ্টা করে। মিত্রতার আড়ালে এরা চিরকাল শত্রুতা করে যায় ।এই ঘর শত্রু বিভীষণ বা মীরজাফর এর উপস্থিতি সর্বকালেই বর্তমান । এদের উপস্থিতির জন্য বৃহৎ সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে বহু সমৃদ্ধ পরিবারের ।
তাই মিষ্ট কথায় ভুলে সমস্ত মানুষকে বিশ্বাস করা উচিত নয়। কারণ এদের কৃত্রিম ভালোমানুষিতে ভুল করলে সহজেই বিপদের মুখে পড়তে হবে । কারণ কৃত্রিম ভালোমানুষির দ্বারা এরা দূর্বলতার কোমল ও গোপন স্থানটি জেনে নেয় এবং সেখানে সহজে তারা আঘাত হানে।
কাব্যের ভাষায় “মধু তিষ্ঠতি জিহ্বাগ্রে হৃদয়ে তু হলাহলম ” ফলে মধুর কথা বর্ষণে এদের হৃদয়ে বিষের সন্ধান পাওয়া যায় না। যদি পূর্বেই সচেতন না হওয়া যায় তবে বিপদ অবশ্যম্ভাবী এবং সেই বিপদের আভাস কখনোই পাওয়া যাবে না।
প্রকাশ্য শত্রুতার দ্বারা সৃষ্ট বিপদের জন্য পূর্বেই সতর্ক হওয়া যায়। কিন্তু গোপন শত্রুর শত্রুতা সম্বন্ধে সতর্ক হওয়া যায় না । তাই এই সমস্ত সমাজের অনিষ্ঠকারক ব্যক্তিকে কখনোই বিশ্বাস করা উচিত নয়।