চন্দ্র কহে বিশ্বে আলো দিয়েছি ছড়ায়ে / কলঙ্ক যা আছে তাহা আছে মোর গায়ে।

চন্দ্র তার স্নিগ্ধ আলো দিয়ে পৃথিবী কে রমণীয় করে তোলে। কিন্তু নিজের গায়ে মেখে নেয় কলঙ্কের দাগ। সেই কলঙ্ক তার কাছে অগৌরবের নয় বরং গৌরবের।

এটাই মহতের ধর্ম।সংসারে যাঁরা মহৎ প্রাণ, তাঁরা যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট বুক পেতে নেন। তাঁরা নিজেরা সংসারের গরল পান করে হন নীলকণ্ঠ।কিন্তু সাধারণের হাতে তুলে দেন অমৃতের পাত্র। নিজেরা অনেক দুঃখ কষ্ট সয়ে সুধা সংগ্রহ করেন।

কিন্তু সেই সুধা সকলকে বিতরণ করেই হন সার্থক। এই সমস্ত লোকেরা অনেক দুঃখ কষ্ট হাসি মুখে বরণ করে নেন।

সমাজের এই সমস্ত সৎ, মহান মানুষেরা হন স্বার্থত্যাগী। নিজের থেকে এই সমস্ত লোক অপরের স্বার্থের কথা বেশি চিন্তা করেন। এ সমস্ত মানুষেরা শোষিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। এই সমস্ত মানুষেরা অনেক লাঞ্ছনা আর দুর্ভোগ ভোগ করে। তাঁরা মানুষের জন্য অকাতরে জীবন উৎসর্গ করে দেন। মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তারা জীবনের জয়গান গান। ক্ষুদ্র স্বার্থ তাঁদের কাছে তুচ্ছ হয়ে গেছে। তবু তাঁদের মহৎ জীবনকে কতভাবেই না কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

এই সমস্ত সৎ, গুণবান মানুষের জীবন ধন্য।তাঁদের জীবনই সার্থক। তাঁদের জীবনকথা মানবিকতায়, উদারতায় এবং মহৎ জীবনচর্চায় দীপ্ত। তারা সাধারণ মানুষের কাছে হয়েছেন শোকের সান্ত্বনা। দুঃখে দুঃখ জয়ের অঙ্গীকার। হয়েছেন অন্ধকারে আলো, হতাশায় আশা। ধার্মিক সৎ মানুষজন যাবতীয় দুর্নাম, অপযযশ গায়ে মেখেও মানুষের মঙ্গল চিন্তাতেই জীবন অতিবাহিত করেন। আঘাত পেয়েও প্রত্যাঘাত করেন না। প্রেমের মহিমা কে প্রচার করেন। সবার জন্যেই তাঁদের হৃদয় দুয়ার উন্মুক্ত। সবার প্রতি তাঁদের ভালোবাসা অফুরন্ত। এই সমস্ত মানুষেরা মানবতার বিগ্রহ, জ্যোতির্ময় আলোর দিশারী।

x

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts
Scroll to Top