ফুল ফোটে,সে তার রুপে- গন্ধে ভ্রমর, প্রজাপতি প্রভৃতিকে আকৃষ্ট করে, মধুদানে তৃপ্ত করে। ফুলের সৌন্দর্য সৌরভ মানুষ উপভোগ করে, মানুষ তার রূপে মুগ্ধ হয়, গন্ধে হয় আমোদিত। অপরের জন্যই ফুল ফোটে অপরের জন্যে সৌন্দর্য ও সৌরভ বিলিয়ে দিয়েই ফুল সার্থকতা অর্জন করে। তেমনি মনুষ্য জীবনের সার্থকতা অপরের সুখ শান্তি ও কল্যাণের জন্য নিজেকে উপসর্গ করার মধ্যে দিয়ে। তাই মানুষের হৃদয় কুসুমকেও পরের জন্য প্রস্ফুটিত হওয়া উচিত।
অপরের মঙ্গল বিধানে নিজের চিন্তা ও কর্মের বিস্তারেই মানুষ্য হৃদয়ের বিকাশ ঘটে। প্রকৃত মানুষের ধর্ম নিজেকে নিয়ে বিব্রত থাকা নয়। সমাজের জন্য কাজ করা যে এরূপ না করে সে মনুষ্য ধর্ম ভ্রষ্ট হয়। এই পৃথিবীতে আজও বহু মানুষ আছে যারা নিজেদেরকে অপরের জন্য অর্পণ করতে সব সময় প্রস্তুত। অপরের শান্তির জন্য তারা নিজেদের কথা ভাবে না। কিন্তু এই সমস্ত মানুষের সংখ্যা খুবই কম। মানুষের জন্যে কল্যাণ কর্মের থেকে মহৎ কিছু নেই। যে ব্যাক্তি অন্যের সুখ-দুঃখ উপলব্ধি করে তার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে সে সকলের কাছে শ্রদ্ধেয় হয়ে থাকে। এতেই তার জীবন চরিতার্থ হয়। তাই প্রতিটি মানুষের আদর্শ হওয়া উচিত জনসেবা ও জনকল্যাণ। মানুষ যদি সদ গুনের অধিকারী হয় এবং পরার্থে ত্যাগ স্বীকার করে তাহলে মানবসমাজ শান্তিময় হয়ে ওঠে ।
লোকহিতৈষণার থেকে পুণ্যকর্ম এই পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না। পৃথিবীর জ্ঞানী গুণী মনীষীরা নানাভাবে এই লোক কল্যাণের আদর্শ প্রচার করেছেন। মানুষ যে মহৎ গুণের অধিকারী তার সেই চরিত্র তার মূল্য অপরের স্বীকৃতিতে। মনুষ্য জাতির কল্যাণ সাধনে যে ব্যাক্তি দুঃখ-দুর্দশা সহ্য করেও নিজেকে বিলিয়ে দেন তিনি চিরকাল এই পৃথিবীতে বরণীয় ও স্মরণীয় হয়ে থাকেন। যেদিন এই পৃথিবীর সমস্ত মানুষ অপরের দুঃখে কাতর হবে এবং সহানুভূতি ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে সেদিন এই পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হবে।
Read More