অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে / তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।

ভাবসম্পসারণ

পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছেন যারা অন্য মানুষের উপর নিরর্থক অন্যায় অত্যাচার করে । কিন্তু অত্যাচারিত মানুষরা শত অত্যাচার সহ্য করেও তাদের উপর হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করে না। কিন্তু এই প্রতিবাদ না করাটাও এক ধরনের অন্যায়। তাই অন্যায় কারী যেমন সকলের ঘৃণায় তৃণের মতো দগ্ধ হয় তেমনি অন্যায় সহ্য কারিও সকলের ঘৃণার তৃণের মতো দগ্ধ হয় । কারণ অন্যায় করা ও অন্যায় সহ্য করা দুটোই সমান অপরাধ।

আমাদের এই পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিজের স্বার্থের জন্য নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে । এইসব মানুষেরা তাদের থেকে কম বলবান ও ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের উপর নিরর্থক অন্যায় অত্যাচার করে। এরা নিজেদের লোভের নেশায় মত্ত হয়ে এই সকল অন্যায় অত্যাচার করে। সমাজে এই সকল মানুষরা সকলের ঘৃণার পাত্র। সমাজের ঘৃণা এই সকল মানুষদেরকে অহরহ তুসের আগুনে দগ্ধ করে । কিন্তু এইসব মানুষরা এ বিষয়ে সচেতন বা চিন্তিত নয়। তারা তাদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধির জন্য অন্যের উপর অত্যাচার চালিয়ে যায়।

অপরদিকে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নিরবে সবলের অন্যায় অত্যাচার সহ্য করে । চোখের সামনে অন্যায় দেখেও প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে না। তাদের এই নীরবতা, ঔদাসীন্য ,কাপুরুষতা অন্যায়কারীকে অন্যায়ের কার্যে আরো বেশি করে উৎসাহিত করে। এইসব ভীরু ,কাপুরুষগন তাদের ভীরুতাও কাপুরষতাকে ক্ষমার মলিন আবরণে ঢেকে রাখার ব্যার্থ চেষ্টা করে । ফলে অন্যায়কারী অত্যাচারী মানুষের মানসিক জড়িতা উপলব্ধি করে আরো বেশি অত্যাচারী হয়ে ওঠে। এইসব অন্যায়কারী সহ্যকারী কাপুরুষ ব্যক্তিবর্গ ও ঘৃণা তুষের আগুনে প্রতিনিয়ত দগ্ধ হয়। তাই বলা যায় অন্যায় কারী যদি প্রত্যক্ষ অপরাধী হয়ে থাকেন তবে অন্যায় সহ্যকারি পরোক্ষ অপরাধী।
সুতরাং অন্যায়ের সামনে দৃঢ় চিত্তে মানষিক জড়তা কাটিয়ে রুখে দাঁড়ানো সকল মানুষের একান্ত কর্তব্য । কারণ মনে রাখা উচিত যে অন্যায়কারী সঙ্গে সঙ্গে অন্যায় সহ্য করেও সমান অপরাধী । কারোর অপরাধের ভার কারোর থেকে কম নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts
Scroll to Top