বেঁচে থাকার ও জীবন ধারণের জন্য মানুষ উপার্জন করে ।এই উপার্জিত অর্থের মাধ্যমে সে তার জীবন ধারণের চাহিদাগুলো পূরণ করে। পরিজন এর ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ,শিক্ষা ও অর্থ আর এইগুলো দাবি মেটাতে প্রয়োজনীয় উপার্জনের জন্য মানুষ সদাই ব্যস্ত থাকে । অর্থ ব্যয়ের পর উপার্জিত অর্থের বাকিটুকু তারা সঞ্চয় করে । এটি ভবিষ্যতের ব্যয় করে ।এই সঞ্চয় সম্ভব হয় প্রতিটি ব্যয়ের সময় হিসাব করে অত্যন্ত যত্নসহকারে পা ফেলার জন্য ।এই পদ্ধতিতে পৃথিবীর প্রায় সব মানুষই গড়ে উঠেছে। ছাপোষা মধ্যবিত্তদের সবকিছু সীমাবদ্ধ ।সবকিছুই একটি গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ ।এইসব মানুষেরা হিসেবী হিসাবে খ্যাতি লাভ করে ।
এর পাশাপাশি একদল মানুষ আছে যারা হিসেব করে কোন কাজ করে না। তারা প্রতিটি পদক্ষেপ হিসাব করে যত্ন করে ফেলে না ।তারা তাদের উপার্জিত অর্থের কিছুটা তাদের জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য খরচ করার পাশাপাশি বাকি অর্থ নিজেদের খেয়ালে, নিজেদের প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে ।আর এইসব মানুষদের হিসেবী মধ্যবিত্ত মানুষেরা বেহিসেবি বলে অভিহিত করে ।এইসব মানুষরা খেয়ালি ,নিজেদের খেয়ালের বশে এমন অনেক কাজ করে যা হিসাবী মানুষের কাছে সমর্থন যোগ্য নয়। আপাতদৃষ্টিতে এদের খেয়াল বেহিসেবি বলে মনে হলেও এদের মধ্যে যে প্রেম ও সৌন্দর্যের এক পূজারী লুকিয়ে আছে তা অস্বীকার করা যায় না ।এরা নিজের প্রাত্যাহিক জীবনের হিসাব-নিকাশের গন্ডি পেরিয়ে নিজেকে পরিব্যাপ্ত করে দিতে চায় নিখিল বিশ্বের সর্বত্র ।এরা জীবনকে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন ,ব্যয় ও সঞ্চয়ের যন্ত্র মাত্র মনে না করে জীবনকে আনন্দ উৎসবের যন্ত্র হিসেবে মনে করে। হিসেবী মানুষরা হিসেবের চক্করে পড়ে কৃপণ ও সংকীর্ণমনা হয়ে যায় । কিন্তু বেহিসেবি মানুষেরা সংকীর্ণমনা হয় না ।
তবে সব মানুষকেই কিছু হিসেব করেও চলা উচিত। কারণ জীবনের পথে চলার সময় নানা চড়াই-উতরাই পার হতে হয় ।আর এই সময় ও অর্থের অনেক প্রয়োজন এবং অভাবের সময় অনেক বন্ধুকেই শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় না সাহায্যের হাত বাড়ানোর জন্য। তাই বেহিসেবি মানুষদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে হিসাব করে চলা উচিত এবং এটি সকল মানুষের একান্ত কর্তব্য।