বন্ধন থেকে মুক্তির স্বাদ পাওয়ার আশা সকলেরই করে। পৃথিবীতে একদল মানুষ আছে যারা জগতের সব মায়ার বন্ধন কাটিয়ে, ইন্দ্রিয় সুখ কে দমন করে, নির্জনে সাধনা করে ঈশ্বরের মোক্ষ লাভের আশায়। তাদের কাছে জগৎ মিথ্যা ,একমাত্র ব্রহ্ম সত্ত্য, তারা জ্ঞানমার্গের পথিক। তাই যোগীরা বৈরাগ্য সাধনা করে মুক্তির পথ খোঁজেন । কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে সমাজ, সংসার ত্যাগ করে ইন্দ্রিয় দমন করে নির্জনে সাধনায় নিয়োজিত হওয়া সম্ভব নয়।
কর্মেই মানুষের মুক্তি। হাজার ও বন্ধনেই সাধারণ মানুষকে মুক্তির পথ খুঁজে পেতে হবে। পঞ্চ ইন্দ্রিয় যার সজীব ও পুলকিত তিনি হতে পারেন জিতেন্দ্রিয়। যাঁরা সংসারের মধ্যে আবদ্ধ থেকে মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তারা ও ঈশ্বরের সেবা করেন এবং অন্তিমে তার মুক্তিলাভ ঘটে। সংসার সমাজ ত্যাগ করে ইন্দ্রিয় দমন করা সহজসাধ্য। কিন্তু সংসারে আবদ্ধ থেকেও যারা ইন্দ্রিয়কে নিজের ইচ্ছা কালে চালনা করতে পারে তারাই আসল যোগীপুরুষ। ঈশ্বর অধিষ্ঠান প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে। তাই মানুষের সেবা করেই সব থেকে তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাওয়া সম্ভব বলে মনে হয় । তাছাড়া ঈশ্বরের অবস্থান সর্বত্র ।তাই নির্জনে বা পবিত্র স্থানে গিয়ে সাধনা করার কোন প্রয়োজন নেই ।কারণ পৃথিবীর প্রতিটি স্থানই পবিত্র । সবস্থানে তার অবস্থান। তাই জগতের যে কোন জায়গায় বসেই ঈশ্বরের আরাধনা করা সম্ভব। নির্জন অরণ্য বা গিরিগুহায় নির্জনে সাধনার ফলে মুক্তি হয় ব্যক্তি মানসের । কিন্তু সংসারে থেকে সাধনার মাধ্যমে বা ভাল কর্মের মাধ্যমে মুক্তি হতে পারে বিশ্বসংসারের। তাই সমাজের ক্ষেত্রে এবং সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে ব্যক্তি মানসের মুক্তি হয় বিশ্বমানবের মুক্তির প্রয়োজন।